কাজী আঃ হালিম ॥ লকডাউনে শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য ১ মাসের খাদ্য ও নগদ ৫০০০ টাকা অর্থ বরাদ্দ, শ্রমিক নির্যাতন-হয়রানী বন্ধ ও বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা, চিকিৎসা ও ভ্যাক্সিনের দাবিতে গতকাল বরিশালে পাঁচ শ্রমিক লাল পতাকা এবং বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুন নিয়ে ব্যতিক্রমী রিক্সা মিছিলের আয়োজন করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বরিশাল জেলা শাখা। বঙ্গবন্ধু উদ্যান থেকে এই রিক্সা মিছিলটি শুরু হয়ে সদর রোড অশি^নী কুমার হল চত্ত্বর হয়ে জেলখানা মোড়, নতুন বাজার, নথুল্লাবাদ, আমতলা মোড়, লঞ্চঘাট হয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সামনে এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। বাসদ আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মানিক হাওলাদার, বরিশাল রিক্সা ভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়ন (২৩২৪) সভাপতি দুলাল মল্লিক, মো. জব্বার, শহীদুল ইসলাম, মো. কবির, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিজন শিকদার প্রমুখ। বাসদ আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন বলেন, শ্রমজীবীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও অর্থ সহায়তা না দিয়ে কোনভাবেই লকডাউন কার্যকর করা সম্ভব নয়। এবার লকডাউনে একদিকে শ্রমিকদের কোন আয়-রোজগার নাই, রাস্তায় নামতে পারছে না, অন্যদিকে এই রমজান মাসে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সকল জিনিসের দাম বেড়েছে। ফলে শ্রমজীবী, দরিদ্র-নিম্নবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোও সীমাহীন দু:খ-দুর্দশার মধ্যে অতিবাহিত করছে। ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী বলেন, এইটা ঠিক যে সারাদেশের মতো বরিশালে করোনা রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। ফলে লকডাউনের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু লকডাউন দেয়ার আগে অবশ্যই গরীব-খেটে খাওয়া মানুষ যারা সারাদিন রোজগার করে সন্ধ্যায় বাজার করে ঘরে ফেরে তাদের অন্তত ১ মাসের খাবার এবং নগদ ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। এই সহযোগিতা ছাড়া এই পরিবারগুলো না খেয়ে উপোষ করবে এমনকি রমজানে সেহরি ইফতারও করতে পারবে না। তাই কাল বিলম্ব না করে এই শ্রমজীবী দরিদ্র পরিবারের তালিকা করে তাদের খাদ্য সহায়তা দিতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকাতে শ্রমিকদের যে হয়রানি-নির্যাতন করা সেটাও বন্ধ করতে হবে। ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী আরও বলেন, শের-ই-বাংলা মেডেকেল কলেজে একটা পিসিআর ল্যাবে দিনে মাত্র ১৮৮টি টেস্ট করা যায় যা এই সময়ে খুবই অপ্রতুল। তাই বরিশালে পিসিআর ল্যাবের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি করোনা চিকিৎসার যে ভয়াবহ সংকট বরিশাল বিভাগে বিরাজ করছে তা দূর করতে করোনা ইউনিটে এবং আইসিইউ এ বেড সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি নগরিতে এবং অন্যান্য জেলাতে করোনা আইসোলেশন সেন্টার চালু করতে হবে। বরিশালে প্রতিদিনই উদ্বেগজনকভাবে করোনা রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এবং সীমিত করোনা বেডের ফলে নগরিতে দ্রুত আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের কোন বিকল্প নেই। নেতৃবৃন্দ লকডাউনে দ্রুত শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষদের জন্য খাদ্য ও অর্থ সহায়তা না দিলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন।
Leave a Reply